সোমবার, অক্টোবর ২৮, ২০২৪

|

একুশ মানে মাথা নত না করে লড়ে যাওয়া

স্টাফ রিপোর্টার
মাসিক মীরসরাই

আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশ বাঙালি জাতির এক অনুপ্রেরণার নাম। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাঙলার দামাল ছেলেরা বাধার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে নেমে এসেছিলো রাজপথে। বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়ে হীরক ছেলেরা সেদিন আদায় করে নিয়েছিলো নিজের মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার। যা আজও আমাদের মাথা নত না করে লড়ে যাওয়ার শিক্ষা দেয়।

১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকায় সফরে এসে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বক্তৃতায় ঘোষণা করেন-“একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।” সেদিন ‘নো নো’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করেছিল এদেশের ছাত্র-যুবকেরা।

এরপর নানা সংগ্রাম আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়। এর জন্য রক্ত ঝরাতে হলেও বাঙালি এক দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। একুশ তাদের এমনি সাহসী করে তোলে যে, এরপর বলা হতে থাকে ‘একুশ মানে মাথা নত না করা’। এই উন্নত শির জাতিই পরে স্বাধীনতা আন্দোলনের দিকে ধাবিত হয়। বস্তুত একুশের পথ ধরেই এসেছে আমাদের স্বাধীনতা।

বিজ্ঞাপন

একুশের এই শক্তির বলে বলীয়ান হয়েই আমরা এগিয়ে যাই। শুধু ভাষার এ মাসে নয়, একুশ আমাদের শক্তি জোগায় সারা বছর। বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষাকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেয়। তাইতো আজ আমরা এগিয়ে যাচ্ছি দূর্বার গতিতে। নতুন নতুন স্থাপনা, প্রযুক্তিতে উৎকর্ষতা, শিক্ষা, জ্ঞান-গবেষণা, খেলাধুলা—সবক্ষেত্রে আজ বাংলার ছেলে-মেয়েরা যোগ্যতার সাক্ষর দিচ্ছে।

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আরও এগিয়ে যাবে। তবে সেই এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশের একুশের শক্তিতে আমরা কতটা উজ্জীবিত হচ্ছি সেই জায়গাটা এসে যেন প্রশ্ন থেকেই যায়। আমরা কি সেই ভাষাশহীদের রক্তের মূল্য দিতে পারছি? নাকি তাদের রক্তের কথা ভুলে গিয়ে নিজে নিজের মতো ফায়দা লুটে নিচ্ছি।

আজকাল ভাষার মাস এলেই যেন আমাদের মায়ের ভাষার প্রতি দরদ বেড়ে যায়। তা না হলে আমরা সরাবছর বিদেশি ভাষার দিকে ছুটতে থাকি। আমাদের দেশের অলিতে গলিতে সব স্থানে বিনদেশি ভাষার ছড়াছড়ি। পথ চলতে গিয়ে মাঝে মাঝে প্রশ্ন তৈরি হয় এই জাতির জন্যই কি সেদিন সালাম-রফিকরা প্রাণ দিয়েছিলো?

বিজ্ঞাপন

আমাদের উচিত এই মায়ের মুখের ভাষাকে আরও আগলে ধরা। আমাদের ইতিহাসের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া। যে একুশ আমাদের মাথা নত না করার শিক্ষা দেয়, সেই একুশকে নত না করা। দেশের উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে একুশের শক্তিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সকল অন্যায় অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়া। আর এমনটা হলে এগিয়ে যাবে আমাদের মাতৃভূমি, শান্তি পাবে ৫২-৭১রে আত্মদানকারীদের আত্মা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত